হজ্বের নিয়মাবলী
হজে¦র মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ৮ ই জিলহজ্ব থেকে। হাজীরা এই দিন মীনায় অবস্থান করেন। ৮ই জিলহজ¦ যোহর থেকে ৯ই জিলহজ¦ ফজর পর্যন্ত মীনায় অবস্থান করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। তারপর ফজরের পরে আরাফাতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখই মূল হজে¦র দিন। এই দিনটিকে ইয়াউমুল আরাফাহ বা আরাফার দিন বলা হয়। কোরআনে এই দিনটিকে 'মাশহুদ' বলা হয়েছে এবং এর কসম খাওয়া হয়েছে। দিনটি সম্পর্কে হাদিস শরীফে এসেছে, নবী পাক (দঃ) এরশাদ করেন- “সব দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ আরাফার দিন। এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন আর নেই।” ৯ই জিলহজ¦ সারাদিন হাজীরা পবিত্র আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন। আরাফাতের ময়দান এমন এক ময়দান যার সাথে পৃথিবীর অন্য কোন ময়দানের তুলনা চলেনা। এই ময়দান অদ্বিতীয়, বেমেসাল, বেনযীর। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজ্বের ফরজ সমূহের মধ্যে অন্যতম ফরজ।
হাজীদের "লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক" ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত হয়। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিতি যেন হাশরের ময়দানে উপস্থিতির একটি নমুনা। এদিন হাজীরা দুনিয়ার সকল কিছুর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এক আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেয়। নিজের সকল পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে আল্লাহর ক্ষমার আশায় তাকিয়ে থাকে। আল্লাহ পাক এই দিন বিশেষভাবে তাঁর রহমতের দরজা খুলে দেন। এবং আরাফাতের ময়দানের সকল হাজীদেরকে ক্ষমা করে দেন। এবং তাদের উসিলায় দুনিয়ার সকল মুসলমানকেও ক্ষমা করে দেন। যে ব্যক্তি আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েও ক্ষমাপ্রাপ্ত হলো না তার মতো দুর্ভাগা আর কেউ নেই।
সারাদিন আরাফার ময়দানে অবস্থান করে সূর্যাস্তের পর মাগরীবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা দেন হাজীরা। সেখানে পৌঁছে মাগরীব এবং ইশা একসাথে আদায় করেন। তারপর সারারাত খোলা আকাশের নীচে রাত্রি যাপন এবং পাথর সংগ্রহ করে মীনার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
১০ই জিলহজ¦ মুজদালিফা থেকে মীনায় পৌঁছে প্রথমে শয়তানকে পাথর মারেন তারপর কুরবানী করে মাথা মুন্ডান। তারপর চলে যান বাইতুল্লায়। সেখানে পৌছে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ এবং সাফা মারওয়া সায়ী করেন। এই কাজ গুলো সম্পন্ন করে আবার মীনার তাঁবুতে ফিরে যান। সেখানে আরো দুইদিন অবস্থান করে ছোট, মাঝারি ও বড় তিনটি শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হবে। একদিনে ৩*৭=২১ টি করে দুইদিনে মোট ৪২টি পাথর মারতে হবে। এই পাথর মারার মধ্য দিয়ে হজ্বের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। যে সকল হাজী হজ্বের আগে মদিনায় যাননি তারা নবী পাকের জিয়ারতের জন্য মদিনায় যাবেন। আর যারা আগে মদিনায় গিয়েছেন তারা হজ্বের ফিরতি ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনবেন। তবে মক্কা থেকে ফিরে আসার পূর্বে অবশ্যই বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে।