রমজানের আধ্যাত্মিকতা
রোজা আল্লাহ পাকের নিকট সবচাইতে প্রিয় ইবাদত। যদিও সকল ইবাদতই আল্লাহর জন্য তবুও আল্লাহ পাক রোজার কথা আলাদা করে বলেছেন-
اَلصَّوْمُ لِي وَأَنَا أَجْزِيْ بِهِ
অর্থাৎ- “রোজা আমার জন্য আর এর প্রতিদানও আমি নিজেই দিবো।”
রোজা একটি দৈহিক ইবাদত হলেও এর মূলে রয়েছে আধ্যাত্মিকতা চর্চার এক সূবর্ণ সুযোগ। আধ্যাত্মিক সাধনার মূল কথা হচ্ছে ঝধপৎরভরপব বা ত্যাগ। আল্লাহ পাক পছন্দ করেন যে বান্দা তার প্রিয় জিনিসগুলো তার প্রভুর রাহে ত্যাগ করুক। রোজা এমন এক ব্যতিক্রমধর্মী ইবাদত যা মানুষকে ত্যাগের শিক্ষা দেয়। মানুষের ভেতরে সবচেয়ে শক্তিশালী যে দুটি প্রবৃত্তি রয়েছে যেমন ভোজনস্পৃহা ও কামরিপু এই দুইটি প্রবৃত্তিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পুরোপুরি দমন করার মাধ্যমে রোজা আদায় করতে হয়। এই দুইটি প্রবৃত্তি পুরোপুরি দমন করার পাশাপাশি মানুষের ভেতরে অন্যান্য যে কুপ্রবৃত্তিসমূহ রয়েছে যেমন লোভ, ক্রোধ, ঈর্ষা, বিদ্বেষ, অহংকার ইত্যাদিকে যে যত বেশি দমন করতে পারবে তার রোজা ততো বেশি সুন্দর হবে এবং সে ততো বেশি প্রভুর নিকটে পৌঁছবে।
পৃথিবীর সকল আধ্যাত্মিক সাধকগণ অধিক পরিমাণে রোজা রাখেন কেননা মানুষের ভেতরের কুপ্রবৃত্তিসমূহকে নির্মূলের জন্য এর চেয়ে শক্তিশালী আর কোন অস্ত্র নেই। অথচ বর্তমানে আমাদের সমাজে কিছু ব্যক্তি অধিক ভোগবিলাসে মত্ত থেকেও নিজেদেরকে আধ্যাত্মিক সাধক বলে পরিচয় দেয়। এগুলো নিঃসন্দেহে আধ্যাত্মিকতার নামে মানুষের সাথে প্রতারণা। মানুষ রোজা রাখার মাধ্যমে যখন তার ভেতরের কুপ্রবৃত্তিসমূহকে দমন করতে সক্ষম হয় তখন তার মধ্যে সৎস্বভাব প্রবল হয়। সৎস্বভাবের অধিকারী মানুষদের সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) বলেন “সৎস্বভাবের বলে মানুষ صائم الدهر অর্থাৎ সারা বৎসর ধরে রোজা রাখার এবং قائم الليل অর্থাৎ সারারাত নামাজ পড়ার ফজিলত লাভ করতে পারে।”
আল্লাহ পাক আমাদেরকে রোজার পরিপূর্ণ আধ্যাত্মিক অর্জনসমূহ লাভ করে জীবনকে ধন্য করার তৌফিক দান করুন। আমীন বিহুরমাতি সায়্যিদিল মুরসালীন।